রাসূল (সা.) এর ডেইলি রুটিন-Daily Routine of Prophet Muhammad (pbuh)

Daily Routine
Daily Routine


রাসূল (সা.) এর ডেইলি রুটিন


তিনি তাহাজ্জুদের পূর্বে উঠতেন। কারণ আমাদের মত তার তাহাজ্জুদ নামাজ ছিল না। তিনি কমপক্ষে দুই ঘণ্টা তাহাজ্জুদের নামাজ পড়তেন অর্থাৎ ২:৩০ মাঝরাতে উঠতেন। ঘুম থেকে উঠে তিনি প্রথম আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করতেন।

ঘুম থেকে উঠার দোয়া:


الْحَمْدُ لِلَّهِ الَّذِي أَحْيَانَا بَعْدَمَا أَمَاتَنَا ، وَإِلَيْهِ النُّشُورُ

উচ্চারণ : আলহামদু লিল্লা-হিল্লাযী আহ্ইয়া-না- বা‘দা মা- আমা-তানা- ওয়া ইলাইহিন্ নুশূর।

অর্থ: প্রশংসা আল্লাহর জন্য, যিনি (নিদ্রারূপ) মৃত্যুর পর আমাদেরকে জীবিত করলেন, আর তারই নিকট সকলের পুনরুত্থান। (মুসলিম, আসসাহিহ : ২৭১১)।

এরপর আল ইমরানের শেষ দশ আয়াত তেলাওয়াত করতেন।
এরপর মেসওয়াক করতেন। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের মৃত্যুর আগে শেষ আমল তিনি মেসওয়াক করেছিলেন। সব নবীরাই মেসওয়াক করতেন।আমরাও ইনশাআল্লাহ মেসওয়াক করব সব সময়। এরপর ৮ রাকাত লম্বা তাহাজ্জুতের নামাজ পড়তেন।কখনো ঘরে বা কখনো মসজিদে তিনি এত লম্বা সময় তাহাজ্জুদের নামাজ পড়তেন যে তার পা কখনো কখনো ফুলে যেত। এরপর মাঝে মাঝে জান্নাতুল বাকি কবরস্থানে কবরবাসীর জন্য দোয়া করতেন এবং কাঁদিতেন। অর্থাৎ কবর জিয়ারত করতেন। এরপর তিনি  ছোট ঘুম নিতেন। যা ছিল ফজরের সালাতের আগ পর্যন্ত। আজানের পর তিনি মসজিদে ফজরের সালাত আদায় করতেন। ফজরের সালাত লম্বা সময় পড়তেন অর্থাৎ ৬০ থেকে ১০০ আয়াত এর সালাত আদায় করতেন। সালাতের শেষে মুসল্লিদের দিকে মুখ ফিরে বসতেন। তাসবি পাঠ করতেন। তারপর মুসল্লিদের বলতেন তোমরা কে কি স্বপ্ন দেখেছো। এরপর তাদের স্বপ্নের ব্যাখ্যা করতেন। তারপর সূর্য ওঠার পর ইসরাকের চার রাকাত নামাজ পড়তেন। তারপর মসজিদ থেকে ঘরে চলে যেতেন। আর ঘরের ঢুকলেই দুটি কাজ করতেন সবসময়।প্রথমে সালাম দিতেন, দ্বিতীয়ত মেসওয়াক করতেন। আর ফজরের পর কখনো ঘুমাতেন না। সকালে খাবার থাকলে খাইতেন। না থাকলে রোজা রাখতেন। তারপর আবার মসজিদে যেতেন। আর মসজিদে ঢুকেই দুই রাকাত সালাত আদায় করতেন এরপর সারাদিনের কে কোন সাহাবী কি কাজ করবে সেটা বলতেন। অর্থাৎ মসজিদে নববীতে রাষ্ট্রের সকল কাজ করতেন।
এরপর সকাল ১০-১১:৩০ আত্মীয়-স্বজনদের বাড়িতে যেতেন এবং খোঁজখবর রাখতেন। বিশেষ করে মা ফাতেমার বাড়িতে যেতেন।মাঝে মাঝে মদিনার বাজারে খোঁজখবর নিতেন। এরপর বাড়িতে যেতেন এবং বাড়ির কাজ করতেন।নিজের কাজ নিজে করতেন। যোহরের আগে মহিলাদের সময় দিতেন কার কি জিজ্ঞাসা তার উত্তর দিতেন। যোহরের পর পুরুষদের সময় দিতেন কার কি জিজ্ঞাসা তার উত্তর দিতেন অর্থাৎ মাসাআলা দিতেন।
কুবা-মসজিদ
কুবা-মসজিদ


এরপর মাঝে মাঝে মসজিদে কুবায় পায়ে হেটে হেটে নামাজ পড়তে যেতেন। এরপর জোহরের নামাজের পূর্বে দুপুরের খাবার খাইতেন। তিনি কখনো একা একা খাইতেন না। সঙ্গে সাহাবী বা যারা থাকতেন তাদের নিয়ে খাইতেন। তিনি কখনো রান্নার ত্রুটি বা ভুল ধরতেন না। খাবার ভালো না লাগলে রেখে দিতেন। তিনি খেজুর, মধু, দুধ বেশি বেশি পছন্দ করতেন এছাড়াও লাউ, কিসমিস, মাশরুম ইত্যাদিও পছন্দ করতেন। তিনি অল্প খেতেন কিন্তু বাসি খাবার খেতেন না। এরপর ঘুমাতেন। তারপর যোহরের সালাতে সময় মসজিদে সালাত আদায় করতেন। নামাজ পর সকালে যে যে কাজ সাহাবীদের  দিতেন তাদের কাজের খোঁজখবর নিতেন। এই খোঁজখবর নিতেই আসরের সময় হতো এবং আসরের সালাত আদায় করতেন। আসরের পর পরিবারকে সময় দিতেন। মাঝে মাঝে আসরের পর বিশেষ কাজে থাকলে বাইরে যেতেন। মাগরিবের সময় হলে মাগরিবের নামাজ পড়তেন। মাগরিবের পর রাতের খাবার খাইতেন। এরপর এশার সময় হতো এবং এশার নামাজ পড়তেন। রাসূল (সা.) এশার নামাজের আগে ঘুম অপছন্দ করতেন এবং এশার নামাজের পর কথা অপছন্দ করতেন। এশার পর ঘুমাতেন।
ঘুমানোর পূর্বে যা যা করতেন:
বিছানা পরিষ্কার করে নিতেন। তারপর অজু করতেন। তারপর স্ত্রীদের সাথে অন্তরঙ্গ কথা বলতেন। এরপর তিন কুল পড়তেন, তিন কুল পড়ে মাথা থেকে পা পর্যন্ত মাসেহ করতেন এবং লম্বা দোয়া পড়তেন। ডান কাতে ঘুমাতেন ও ঘুমানোর দোয়া পড়তেন।

          ✍️ Quran Sunnah 💝

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

If you have any doubts. Please let me know.

নবীনতর পূর্বতন
"'glt'"/body>