সফলতার মানদন্ড

 

সফলতার মানদন্ড
সফলতার মানদন্ড

সফলতার মানদন্ড 

পৃথিবী জুড়ে মানুষের সংগ্রাম সফল হওয়ার। সফল হওয়ার জন্য মানুষের রাত-দিন তুমুল সংগ্রাম, কঠোর পরিশ্রম, দ্বন্দ্ব-হিংসা, স্বার্থের বিবাদ। কিন্তু কোথাও পাওয়া যায় না সফলতার সেই সত্যিকারের অমৃত ফল। সফল হওয়ার জন্য হাজারো কৌশল নিয়ে শত শত বই বের হয়ছে। শত শত বই শত কোটি মানুষ পড়তেছে। কিন্তু সত্যিকারের সফল মানুষ কি আমরা পাচ্ছি? কিংবা আমরা যাদের সফল বলতেছি তারা কি সত্যিকারের সফল ? সৃষ্টি ও মানুষের কল্যাণে তারা কি আনছে কোনো সুফল?


সমাজের সফলতা

আমাদের বর্তমান সমাজে সফলতা মানে প্রধানত দুটো জিনিসকেই বুঝায় –১.অর্থ এবং ২.ক্ষমতা কিন্তু অর্থ , ক্ষমতা ও সফলতা আজকাল প্রায় সমার্থক হয়ে পড়েছে। কারো কারো মতে,জীবনের সাফল্য মানে ধনসম্পদ, জনপ্রিয়তা ও খ্যাতি অর্জন। আবার অনেকে মনে করে, সফলতা মানে লক্ষ্য অর্জন। কেউ কেউ বলেন, সফলতা হচ্ছে সততা ও প্রচেষ্টা দ্বারা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে লক্ষ্য অর্জনের মাধ্যমে আত্মতৃপ্তি ও অনুভূতি লাভ করা।


সফলতা কি

আসলেই সফলতা এই রকম কোন নির্দিষ্ট বস্তু নয় যে আমরা তা একবার অর্জন করলেই আজীবন সে আমাদের কাছে থেকে যাবে । জীবনের প্রতি পদক্ষেপে নির্দিষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছোতে পারার নামই হচ্ছে সফলতা । আমাদের এই জীবন সামান্য কিছু সময়ের সমষ্টি মাত্র।  দুনিয়ার এই ক্ষণিক মুহুর্তেও এমন কেউ নেই, যে সফল  হতে চায় না।  কোন ব্যক্তি যখন তার অভিষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছে তখন তিনিই সফল।  এটাই তার সফলতা।


সফলতার ফল

মানসিক প্রশান্তি, হৃদয়ে তৃপ্তি, অগাধ সুখ, সকল প্রকার দুশ্চিন্তা আর উৎকণ্ঠা থেকে মুক্তির মাধ্যমে মানুষ সফলতা খোঁজে থাকে। প্রকৃতপক্ষে সুখী, সুন্দর ও সফল একটা জীবনের কথা ভাবলে এসবের বাহিরে আর চাওয়ার কিছু থাকে না। এসব অর্জনের জন্য অনেকে ধর্মীয় উপায় অবলম্বন করে। আবার কেউবা ধর্মের তোয়াক্কা না করেই কিছু বাস্তবিক পন্থা অবলম্বন করে তা অর্জন করতে চাই। কেবলমাত্র একজন মুমিন ব্যক্তিই এ দুইয়ের সফল সমন্বয়ে ঘটাতে পারে যিনি নিজেকে তাঁর স্রষ্টার কাছে সমর্পণ করেছেন। তাঁর বিধান পালনের মাধ্যমেই কেবল মাত্র সফলতার মুখ দেখা সম্ভব।


সফলতার লক্ষ্য

সফলতা শব্দের ব্যাপকতা রয়েছে!প্রত্যক মুসলমানের জীবনে দুটি লক্ষ্য আছে.. ১.দুনিয়াবী এবং ২.পরকালীন।লক্ষ্যকে সামনে রেখে সফলতারো দুটি মানদন্ড রয়েছে ..১.দুনিয়াবী সফলতা ২.পরকালীন সফলতা। ভোগ ও বিলাস হবে আখেরাতের কঠিন যন্ত্রণার কারণ। পক্ষান্তরে সঠিক পথে চলতে গিয়ে দুনিয়ার দুঃখ-কষ্টই হবে আখেরাতের সঞ্চয় ও সফলতার উপায়। তাহলে সফল কারা? এ প্রশ্নের উত্তরে মহান আল্লাহ তাআলা কোরআনুল কারিমে ঘোষণা করেছেন- যারা ঈমান এনেছে এবং সৎ কাজের আদেশ দেয় ও অসৎ কাজে বাধা দেয় তারাই প্রকৃত সফল।


আল্লাহ কাছে কারা সফল

ঈমান হলো মহান আল্লাহ প্রদত্ত মহামূল্যবান নিয়ামত। মানুষের জীবন সৃষ্টির উদ্দেশ্যকে লক্ষ্য করে আল্লাহ বলেছেন, যে ব্যক্তি সৎ আমল করে সেই সর্বশ্রেষ্ঠ। কিন্তু ঈমান ছাড়া মানুষের কোনো আমল আখিরাতে গ্রহণযোগ্য হবে না। জাহান্নাম থেকে মুক্তির প্রথম শর্ত হলো, ঈমান। তাই যারা প্রকৃত মুমিন তারা সব কিছুর ওপর তাদের ঈমানকে প্রাধান্য দেয় এবং সকল কিছুই আল্লাহ ভালোবাসা জন্য করে। দুনিয়ার পার্থিব স্বার্থ উদ্ধারের জন্য তারা কখনো ঈমান বিক্রি করে না। কখনো অসত্য ও অন্যায়ের পক্ষ নিতে পারে না। পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ বলেন, ‘জেনে রেখো, তোমাদের মধ্যে রাসুল রয়েছেন। তিনি বহু বিষয়ে তোমাদের কথা শুনলে তোমরাই কষ্ট পেতে। কিন্তু আল্লাহ তোমাদের কাছে ঈমানকে প্রিয় করেছেন এবং কুফরি, পাপাচার ও অবাধ্যতাকে করেছেন অপ্রিয়। তারাই সৎপথ অবলম্বনকারী।’ (সুরা: হুজরাত, আয়াত - ৭)


এটিই ঈমানদার আর কাফেরের মধ্যে পার্থক্য। ঈমানদারা আল্লাহকে ভালোবাসে। তারা সব কিছুর উপর আল্লাহর ভালোবাসাকেই প্রাধান্য দেয়। তাদের কাছে দুনিয়ার সব কিছু উদ্ধে ঈমানই সবচেয়ে প্রিয়। তারা কখনো অবাধ্যতা ও পাপাচারকে পছন্দ করে না। 


রাসুল (সা.) বলেন, ‘যার নেক আমল তাকে আনন্দিত করে এবং বদ আমল কষ্ট দেয়, সেই হলো প্রকৃত ঈমানদার।’ (তিরমিজি, হাদিস : ২১৬৫)


কুরআনে বলা হয়েছে ‘পক্ষান্তরে যারা ঈমান এনেছে তারা আল্লাহকে সর্বাধিক ভালোবাসে।’ (সুরা বাকারা, আয়াত : ১৬৫)


✍️ কুরআন সুন্নাহ ✍️

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

If you have any doubts. Please let me know.

নবীনতর পূর্বতন
"'glt'"/body>