যে সব বিষয় নিয়ে আফসোস করতে নেই

আফসোস
আফসোস


আসসালামুয়ালাইকুম, আশা করি সবাই ভালো আছেন। ‘নাহ, এতো চেষ্টা করলাম ঘুরে দাঁড়ানোর, পারলাম না’- এই কথাটি আমরা প্রায়ই বলে থাকি। ভালো কিছু করবো কিন্তু প্রতিবন্ধকতাগুলো কিছুতেই করতে দিলো না। ছোট এই জীবনের পরিস্থিতি আর প্রতিবন্ধকতার আফসোস আমাদের জীবনে কখনো ফুরোয় না। এক জীবনে অনেক কিছু নিয়েই আমাদের আফসোসের কোন শেষ নেই। জীবনটা কেন এমন হলো এটা সেটা নিয়ে এত না ভেবে যা হয়েছে তা নিয়ে সন্তুষ্ট থাকতে আমরা কেউই রাজি নই। তাই যে সব বিষয় নিয়ে আফসোস করতে নেই,তা জেনে নেই...

৬টি বিষয় নিয়ে কখনো আফসোস করবেন না- 

১.নিজের চেহারা,স্বাস্থ্য,রূপ 

আল্লাহ বলেছেন, ‘আমি মানুষকে সবচেয়ে সুন্দরতম গঠনে সৃষ্টি করেছি’। (সূরাতিন, আয়াত: ৪)

আয়নার সামনে দাঁড়ালেই তো মনটা খারাপ হয়ে! এমন দেখায় কেন, আরেকটু ফ্রেশ চেহারা হলে কি খুব ক্ষতি হতো, অমুকের চেহারাটা কত সুন্দর! এই কথাগুলো ভেবে দেখলেন আপনার চেহারা খুবই খারাপ। মনে রাখবেন, নিজের চেহারা নিয়ে কখনো আফসোস করতে নেই। কারণ আফসোস করে কোনো লাভ নেই। সৃষ্টিকর্তা যা দিয়েছেন, তাই অনেক। আপনার চেহারাটা বিকৃত হতে পারতো, দুর্ঘটনার কারণে চেহারাটা নষ্ট হতে পারতো, আপনার কোনো অসুখ থাকতে পারতো- সেটা ভাবুন। নিজে ভালো থাকতে চেষ্টা করুন, চেহারায় কিছু যাবে আসবে না।

আপনি শুধু সুন্দরই নন একজন সম্মানিত মানুষও বটে। এ সম্মানও আপনাকে আল্লাহ্‌ তাআলাই দিয়েছেন। তিনি এখানে সাদা-কালো হিসেব করেন নি। কালোকে অবজ্ঞা করেন নি। দেখুন তিনি কী বলেছেন, ‘আর আমি তো আদম সন্তানকে সম্মানিত করেছি’। (সূরা বনী ইসরাঈল, আয়াত: ৭০)

২.নিজের অর্থনৈতিক অবস্থা নিয়ে 

আল্লাহ বলেছেন,‘আল্লাহ্‌ তোমাদের চেহারা এবং ধন-সম্পদ দেখেন না বরং তিনি তোমাদের অন্তর ও আমল দেখেন’। (সহিহ মুসলিম, হাদীস- ২৫৬৪) 

আল্লাহ আমাদের যা দিয়েছেন তা নিয়ে সন্তুষ্ট থাকা উচিত।কেননা আল্লাহ বলেছেন,যদি তোমরা শুকরিয়া আদায় কর, তবে আমি অবশ্যই তোমাদের বাড়িয়ে দেব, আর যদি তোমরা অকৃতজ্ঞ হও, নিশ্চয়ই আমার আজাব বড় কঠিন' (ইব্রাহিম -৭)।

৩.প্রিয় জিনিস হারিয়ে গেলে 

ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউ’ন। (সুরা বাক্বারা : আয়াত ১৫৬)। কোনো জিনিস হারিয়ে গেলে যে ব্যক্তি সহিহ নিয়তে কুরআন এ আয়াতটি তিলাওয়াত করতে করতে হারানো জিনিস অনুসন্ধান করে, নিশ্চয় সে হারানো জিনিস পেয়ে যায়। অথবা এ আমলের ফলে আল্লাহ তাআলা হারানো জিনিসের চেয়েও উত্তম বস্তু দান করেন।

৪.পরিবার নিয়ে কখনো আফসোস করতে নেই 

পরিবার যেমনই হোক, সেটা জন্য জীবনের প্রতি কৃতজ্ঞ থাকুন। এটা ভেবে সুখী হন যে আপনি অনাথ নন, আপনার জীবন কোন অনাথালয়ে কাটেনি। 

প্রায় কথাতেই আপনি বলেন অনেক সময়ে, এই পরিবার আমার ভালো লাগে না, আমার পরিবারটা একদম আমার মনের মত নয়, তারা আমার কথা মানেন না, আমার এই পরিবারটা না হলেই ভালো হতো। কিন্তু পরিবার যেমনই হোক, সেটা যে আপনার জন্য একটা আশীর্বাদ এটাও মাথায় রাখবেন। পরিবার যেমনই হোক তার জন্য জীবনের প্রতি কৃতজ্ঞ থাকুন। আপনার মাথার ওপর একটা ছায়া রয়েছে, সেটা ভাবুন। দেখবেন আর আফসোস হচ্ছে না, সুখবোধ হচ্ছে। 

৫.ভুল মানুষ/জিনিস জীবন থেকে চলে গেলে এবং 

‘হে ইমানদারগণ! তোমরা ধৈর্য ধারণ করো এবং দৃঢ়তা অবলম্বন করো আর আল্লাহকে ভয় করো, যাতে তোমরা সফল হতে পারো।’ (সুরা ৩ আলে ইমরান, আয়াত: ২০০)।

৬.যে কোন কাজ নিয়ে 

জীবনের শেষ পর্যায়ে এসে আমাদের মনে আফসোস জন্মায় নিজের চাকরী নির্বাচন নিয়ে। জীবনের প্রথম চাকরী নির্বাচন, একই চাকরীতে দীর্ঘদিন আটকে থাকা এবং ক্যারিয়ার সম্পর্কিত আরো নানান বিষয় নিয়ে আফসোস করি। বিশেষ করে জীবনের শেষ পর্যায়ে এসেও যারা খুব বেশি সঞ্চয় করতে পারেন নাই কিংবা সাফল্য অর্জন করতে পারেন নাই তাদের এধরণের আফসোসগুলো বেশি হয়। এগুলো নিয়ে আমাদের আফসোস করতে নেই।এটা আমাদের তকদি ছিল বলে মনে করে নিতে হবে।

‘ধৈর্যের সঙ্গে, নামাজের মাধ্যমে আল্লাহর সাহায্য কামনা করো। অবশ্য তা কঠিন; শুধু বিনয়ী লোকদের পক্ষেই তা সম্ভব।’ (সুরা ২ বাকারা, আয়াত: ৪৫)। 

✍️ কুরআন সুন্নাহ ✍️

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

If you have any doubts. Please let me know.

নবীনতর পূর্বতন
"'glt'"/body>